ননোগ্রাম

ননোগ্রাম একটি জাপানি লজিক্যাল পাজল যেখানে লুকানো ছবি থাকে, যা হতে পারে মানুষ, প্রাণী বা জ্যামিতিক আকার। এই ধাঁধাটি বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন Paint by Numbers, Griddlers, Pic-a-Pix, Picross, Picma, PrismaPixels, Pixel Puzzles, Crucipixel, Edel, FigurePic, Hanjie, HeroGlyphix, Illust-Logic, Japanese Crosswords, Japanese Puzzles, Kare Karala, Logic Art, Logic Square, Logicolor, Logik-Puzzles, Logimage, Oekaki Logic, Oekaki-Mate, Paint Logic, Picture Logic, Tsunamii, Paint by Sudoku এবং Binary Coloring Books।

একটি আয়তাকার গ্রিডে সংখ্যাসূচক নির্দেশনার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ঘরগুলো রঙ করতে হয়, যাতে একটি ছবি তৈরি হয়।

গেমের ইতিহাস

ননোগ্রাম বিগত শতাব্দীর শেষের দিকে জাপানে আবির্ভূত হয়। এই ধাঁধার প্রকৃত স্রষ্টা এখনো সম্পূর্ণ নিশ্চিত নয়, তবে দুটি প্রধান সম্ভাব্য স্রষ্টার নাম জানা যায়। প্রথমজন হলেন ইলাস্ট্রেটর ও ডিজাইনার নন ইশিদা (石田 のん), যিনি দাবি করেন যে তিনি ১৯৭০ সাল থেকে ননোগ্রাম ব্যবহার করে প্রাণীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। ইশিদা বিশ্বাস করতেন যে ভুল বোঝাবুঝির মূল কারণ হলো যোগাযোগের অভাব, তাই তিনি গবেষণা চালান এবং কালো ও সাদা বর্গক্ষেত্র দিয়ে তৈরি একটি সংকেত পদ্ধতি তৈরি করেন।

১৯৮৭ সালে তিনি Window Art প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, যেখানে তিনি অন্ধকার ও আলোকিত জানালার মাধ্যমে একটি উচ্চ ভবনের নকশা তৈরি করেন—এবং বিজয়ী হন। পরের বছর, Window Art Puzzles নামে তিনটি ধাঁধা প্রকাশিত হয়। একই সময়ে, ননোগ্রামের আরেক সম্ভাব্য নির্মাতা, জাপানি ধাঁধা ডিজাইনার তেতসুয়া নিশিও (西尾 徹也), "সংখ্যার মাধ্যমে অঙ্কন" নামক ধাঁধাটি উদ্ভাবন করেন এবং এটি একটি ভিন্ন প্রকাশনায় প্রকাশ করেন।

প্রাথমিকভাবে, এই নতুন ধরণের লজিক্যাল ধাঁধাগুলো তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি, কারণ ধাঁধার অনুরাগীরা কীভাবে সেগুলো সমাধান করতে হবে তা জানতেন না। তবে ১৯৮৯-১৯৯০ সালে যখন ননোগ্রাম যুক্তরাজ্যে প্রকাশিত হয় এবং The Telegraph পত্রিকার প্রতিটি সংখ্যায় প্রকাশিত হতে শুরু করে, তখন এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

ইউরোপ থেকে এই ধাঁধাটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, রাশিয়ায় পৌঁছে এবং শেষ পর্যন্ত আবার জাপানে ফিরে আসে। তখন থেকে ননোগ্রামের সংগ্রহ ব্যাপকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে এবং জনপ্রিয়তায় শীর্ষে থাকে। আজ, এই জাপানি লজিক্যাল ধাঁধাগুলো বহু সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন এবং ডিজিটাল সংস্করণে পাওয়া যায়।

মজার তথ্য

শুরুতে, ননোগ্রাম কেবলমাত্র সাদা-কালো ছিল, তবে এখন রঙিন সংস্করণও পাওয়া যায়। এর সর্বাধিক আকার ১৫০×১৫০ ঘর পর্যন্ত হতে পারে। একটি সহজ ননোগ্রাম সমাধান করতে কয়েক মিনিট সময় লাগতে পারে, যখন আরও জটিল সংস্করণগুলোর জন্য কয়েক ঘণ্টা প্রয়োজন হতে পারে।

প্রমাণিত হয়েছে যে প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা ধাঁধা সমাধান করা বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক। ননোগ্রাম লজিক্যাল ও ভিজ্যুয়াল চিন্তা ছাড়া সমাধান করা সম্ভব নয়। জাপানি ধাঁধাগুলো চেষ্টা করুন—এগুলো মজার এবং উপকারী!